প্রকাশিত: Mon, Mar 4, 2024 12:06 PM
আপডেট: Wed, Jun 25, 2025 2:16 PM

[১]বাজারে মজুত ঠেকাতে ডিসিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর [২]ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড অনুসরণ নিশ্চিত করুন

এম খান: [৩] প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড বজায় রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে বিশেষ করে মাঠ পর্যায়ের  প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন। 

[৪] বাসস জানায়, একই সাথে রমজানকে সামনে রেখে যে কোনো ধরনের খাদ্য মজুদ ও ভেজালের বিরুদ্ধেও কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

[৫] তিনি বলেন, ‘বিল্ডিং কোড অনুসরণ করে সঠিকভাবে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে কিনা তা সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে। শুধু সিটি করপোরেশন এলাকায় নয়, দেশের অন্যান্য স্থানেও এটি অনুসরণ করতে হবে।’

[৬] প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার তাঁর কার্যালয়ের (পিএমও) শাপলা হলে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) চার দিনব্যাপী বার্ষিক সম্মেলন উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।

[৭] প্রধানমন্ত্রী সাম্প্রতিক অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ বেইলি রোডের দুর্ঘটনা কবলিত স্থানে দ্রুত ছুটে যাওয়ায় এবং জনগণের পাশে দাঁড়ানোয় ঢাকা জেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান।

[৮] তিন ফসলি আবাদি জমি বাড়িঘর বা শিল্প-কারখানাসহ অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না মর্মে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে তিনি মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের ফসলি জমিকে রক্ষা করতে হবে’।

[৯] প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ অতিমারি এবং ইউক্রেন -রাশিয়া  যুদ্ধের প্রভাব  বিশ্ব অর্থনীতিতে পড়েছে। পৃথিবীতে  এখন এমন দেশও রয়েছে যেখানে মূল্যস্ফীতি ৪০ ভাগে উঠে গেছে। বাংলাদেশও এর থেকে দূরে নয়, যদিও বাংলাদেশে এখনো মূল্যস্ফীতি ১০ ভাগের নিচে রয়েছে। কিন্তু তারপরও সমস্যা রয়ে গেছে। 

[১০] প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোথাও যেন ভোক্তাদের কোনরকম হয়রানির শিকার হতে না হয়। আমাদের দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে হবে।’।

[১১] শেখ হাসিনা বলেন, আরেকটি বিষয় হচ্ছে সরবরাহ। সেটা নিয়েও সমস্যার সৃষ্টি হয় অথবা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়। কেউ কেউ মজুদদারি করে । পণ্য পচিয়ে ফেলবে তবু বাজারে ছাড়বেনা। সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিয়ে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।

[১২] তিনি খাদ্যে ভেজাল দেয়া প্রতিরোধেও জেলা প্রশাসকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, রোজা আসলেই এই সমস্যাগুলো বেশি পরিমাণে দেখা দেয়। 

[১৩] জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন  স্বাগত বক্তব্য দেন এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া ও বক্তব্য রাখেন।

[১৪] বিভাগীয় কমিশনারদের পক্ষে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম এবং জেলা প্রশাসকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রামের ডিসি আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ও গাইবান্ধার ডিসি কাজী নাহিদ রসুল।

[১৫] অনুষ্ঠানে স্থানীয় প্রশাসনের উদ্ভাবন, সেবা এবং সার্বিক উন্নয়নের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।

[১৬] আমাদের সমাজে কিশোর গ্যাং সমস্যা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যাবে এবং পড়াশোনা করবে সেই সময় এই সমস্যাটা দেখা দেয়। 

[১৭] প্রতিকারের থেকে প্রতিরোধের দিকে মননিবেশ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, পরিবারগুলোকে একটু সচেতন করতে হবে, শুধু গ্রেপ্তার করে বা ধরে লাভ নেই। সেক্ষেত্রে সেখানে থাকা বড় অপরাধীদের সংস্পর্শে এসে এরা আরো বড় কোন ধরনের অপরাধ সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যেতে পারে। 

[১৮] তিনি মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনকে জনগণকে কর প্রদানে উৎসাহিতকরণ ও সচেতনতা সৃষ্টি, সার্বজনিন পেনশন স্কিম গ্রহণ, সমবায়ের মাধ্যমে কৃষিকে উৎসাহিতকরণ, সেচ কাজে সোলার প্যানেলের ব্যবহার নিশ্চিত করার উদ্যোগ গ্রহণ ও সমন্বিত বাজার ব্যবস্থা গড়ে তোলার এবং দেশের প্রতি ইঞ্চি অনাবাদি জমিকে চাষের আওতায় আনার উদ্যোগ গ্রহণের আহবান জানান। 

[১৯] সরকারের প্রকল্প গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনকে নজর রাখার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা এবং এগুলো কতটুকু স্থানীয় জনগণের কাজে আসবে সে বিষয়ে প্রয়োজনে তাঁকে সরাসরি রিপোর্ট প্রদানের আহবান জানান তিনি। 

[২০] মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন, স্মারক এবং গণকবর সংরক্ষণের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবজ্জ্বল ইতিহাসকে আগামী প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার পাশাপাশি শহীদ দিবস ও আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবসসহ জাতীয় দিবসগুলোর তাৎপর্য নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্যও তিনি তাদের প্রতি আহবান জানান।

[২১]  প্রধানমন্ত্রী তাঁকে ভোট দিয়ে পুনরায় সরকার পরিচালনায় সুযোগ করে দেয়ার মাধ্যমে উন্নয়নের ধারাবাহিতা অব্যাহত রাখার সুযোগ প্রদানের জন্য আবারও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে  বলেন. আমি ১৯৭৫ সালের পর যে নির্বাচনগুলো প্রত্যক্ষ করেছি এবং অংশ নিয়েছি, তারমধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সবচেয়ে সুষ্ঠু,অবাধ এবং গ্রহণযোগ্য হয়েছে।

[২২] দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন গ্রহণযোগ্যভাবে অনুষ্ঠানে মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে তাদের দায়িত্ব পালনের জন্য ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।